ফারাক্কা বাঁধের গেট কয়টি - ফারাক্কা বাঁধের বর্তমান অবস্থা

ফারাক্কা বাঁধের গেট কয়টি, তা নিচে তুলে ধরা হবে। বাংলাদেশের জন্য ক্ষতিকর এই বাঁধ সম্পর্কে যদি আপনি বিস্তারিত তথ্য জানতে চান, আর্টিকেলটি পড়তে থাকুন। কেননা, ফারাক্কা বাঁধের গেট কয়টি সে বিষয় সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। চলুন দেখে নেয়া যাক, ফারাক্কা বাঁধের গেট কয়টি।

পেজ সূচিপত্র: ফারাক্কা বাঁধের গেট কয়টি - ফারাক্কা বাঁধের বর্তমান অবস্থা

ভূমিকা

নিচে ফারাক্কা বাঁধের গেট কয়টি এবং ফারাক্কা বাঁধের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। তাই ফরাক্কা বাঁধ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে শেষ পর্যন্ত পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগের সহিত অধ্যয়ন করুন। ফারাক্কা বাঁধ বাংলাদেশের মাথা ব্যাথার কারণ। ফারাক্কা বাঁধের কারণে বাংলাদেশ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। 

ফারাক্কা বাঁধ বাংলাদেশের যে সকল ক্ষতির কারণ তা বর্ণনা করা কঠিন। কেননা বাংলাদেশে ফারাক্কা বাঁধের বিরূপ প্রভাব এতটাই বেশি, যে এই ফারাক্কা বাঁধের কারণে বিভিন্নভাবে বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিশেষ করে বাংলাদেশের নদী গুলো নব্যতা হারিয়েছে, এর ফলে কৃষি কাজে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে এবং ফসল উৎপাদন কমেছে।

নদীতে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি না থাকার কারণে হাজার হাজার কিলোমিটার নৌপথ বন্ধ হয়ে রয়েছে। শুধু তাই নয়, ফারাক্কা বাঁধের কারণে, নদীগুলোতে পলির প্রবাহ নিয়ে গিয়েছে। আর এ কারণে কৃষি জমি অনুর্বর হয়ে পড়ছে। বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে, একই সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশের সমতল ভূমির ক্রমান্বয়ে দেবে যাচ্ছে। বাংলাদেশের সমতল ভূমির ক্রমান্বয়ে দেবে যাওয়ার পিছনেও ফারাক্কা বাঁধের ভূমিকা রয়েছে।

এক কথায় বলতে গেলে বাংলাদেশকে সার্বিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে ফারাক্কা বাঁধ। যাই হোক এই আর্টিকেলটিতে ফারাক্কা বাঁধ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। তাই আপনি যদি, জানতে চান যে, ফারাক্কা বাঁধের গেট কয়টি এবং ফারাক্কা বাঁধের বর্তমান অবস্থা কি? তাহলে পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগের সহিত পড়ুন। আশা করি ফারাক্কা বাঁধ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবেন। 

ফারাক্কা বাঁধের গেট কয়টি

১৯৯৫ সালে ভারত ফারাক্কা বাঁধ চালু করে। ১৯৬১ সালে ফারাক্কা বাঁধের নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। এবং ১৯৯৫ সালে এসে ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণ সম্পন্ন হয় এবং সে বছরেই বাঁধটি চালু করা হয়। ফারাক্কা বাঁধ কে এমন ভাবে তৈরি করা হয়েছে যে গঙ্গা নদীর পানি যেন কোনভাবেই প্রবাহিত হতে না পারে। অর্থাৎ গঙ্গা নদীর পানি যেন তারা পুরোপুরি ভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে সেই ফারাক্কা বাঁধে তারা ১০৯ টি গেট নির্মাণ করেছে। 

প্রয়োজন মাফিক তারা এই গেট গুলো বন্ধ রাখে আবার খুলে দেয়। যতগুলো গেট বন্ধ রাখা প্রয়োজন ততগুলো বন্ধ রাখে যতগুলো খুলে দেয়া প্রয়োজন ততগুলো খুলে দেয়। বিশেষ করে খরা মৌসুমে তারা প্রায় সবগুলো গেট বন্ধ করে দেয়। আবার বর্ষাকালে যখন তাদের অঞ্চলে বন্যা শুরু হয় তখন সবগুলো গেট খুলে দেয়।
অর্থাৎ ফারাক্কা সম্পূর্ণরূপে তারা নিজেদের স্বার্থ রক্ষার জন্য ব্যবহার করে থাকে। পক্ষান্তরে, খরার সময় গেট বন্ধ করার কারণে বাংলাদেশ পানি সংকট থাকে আবার বর্ষার সময় নিম্ন অঞ্চল প্লাবিত হয়ে বন্যার সৃষ্টি হয়। এক কথায় ফারাক্কা বাঁধের গেট খুলে তারা নিজেদের সুবিধার জন্য ব্যবহার করে থাকেন।  ফারাক্কা বাঁধের গেট কয়টি, আশা করি এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর পেয়েছেন। নিচে ফারাক্কা বাঁধের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে আলোকপাত করা হবে। 

ফারাক্কা বাঁধের বর্তমান অবস্থা

ফারাক্কা বাঁধ চালু হওয়ার পর থেকেই বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে আসছে।  বর্তমানে এই ক্ষতির পরিমাণ আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। এর কারণ হলো এমনিতেই নদীতে পানির প্রবাহ আগের তুলনায় অনেক কমে গিয়েছে, তার উপরে ফারাক্কা বাঁধের কারণে, বর্তমানে পদ্মা নদী সংশ্লিষ্ট অন্যান্য নদী গুলো প্রায় পানি শূন্য। 

যদিও গঙ্গা নদীর পানি বন্টন কিভাবে হবে? বা কোন দেশ কতটুকু পানি পাবে, সে ব্যাপারে ভারতের সাথে অনেকগুলো চুক্তি হয়েছে। তবে কখনোই কোন চুক্তি ফলপ্রসু হয়নি। অর্থাৎ বাংলাদেশ তাদের ন্যায্য হিসাব কখনোই বুঝে পাইনি। বাংলাদেশ যতটুকু পানি পাওয়ার কথা তা কখনোই বাংলাদেশ পায়নি। আর এ কারণে দেখা যায় করার মৌসুমে, হার্ডিঞ্জ ব্রিজের নিচ দিয়ে মোটরসাইকেল সহ অন্যান্য যানবাহন অনায়াসে চলাচল করতে পারে।

পক্ষান্তরে বর্ষাকালে অতিরিক্ত পানি প্রবাহের কারণে নদীর তীরবর্তী অঞ্চলগুলো সহ অন্যান্য জায়গার নিচে অঞ্চল গুলো খুব সহজেই প্লাবিত হয়ে যায়। সুতরাং বুঝতেই পারছেন, ফারাক্কা বাঁধের বর্তমান অবস্থা, বাংলাদেশের জন্য আরও বেশি ক্ষতিকর। ইতোমধ্যেই উপরে, ফারাক্কা বাঁধের গেট কয়টি, সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। 

ফারাক্কা বাঁধের ইতিহাস

ফারাক্কা বাঁধের গেট কয়টি এবং ফারাক্কা বাঁধের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে ইতোমধ্যেই উপরে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। তাই আর্টিকেল্টের এই অংশে, ফারাক্কা বাঁধের ইতিহাস তুলে ধরা হবে। বিভিন্ন সমস্যার কারণে, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হুগলি নদীতে প্রচুর পরিমাণে তোলানি জমা হয় যার ফলে হুগলি বন্দর ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়ে।

তাই হুগলি নদীর প্রবাহ ঠিক রাখার জন্য এবং হুগলি নদীতে জমে থাকা তোলা নেই পরিষ্কার করার জন্য ভারত সরকার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে যে তারা গঙ্গা নদীর পানি হুগলি নদীতে প্রবাহিত করে হুগলি নদীকে সচল করবে। সেই উদ্দেশ্যে ভারত সরকার গঙ্গা নদীতে একটি ব্যারেজ নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করে। 

যখন ভারত সরকার ফারাক্কা বাঁধের বিষয়টি জনসম্মুখে তুলে ধরে তখন অনেকেই এর বিরোধিতা করে। তৎকালীন পাকিস্তান সরকার ফারাক্কা বাঁধের চরণ বিবেচিত করে। এবং তারা বলে যে ফারাক্কা বাঁধের কারণে পূর্ব পাকিস্তান (বাংলাদেশ) ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তবে তৎকালীন সময়ে, সকলের কথা উপেক্ষা করে একতরফাভাবে ভারত সরকার ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা চূড়ান্ত করে। 

এবং ১৯৬১ সালে ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণ কাজ শুরু করে। এরপর ১৯৭৫ সালে ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয় এবং সে বছরই ফারাক্কা বাঁচার চালু করা হয়। ততদিনে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের গলার কাটা হিসেবে আবির্ভূত হয় হয়ে ফারাক্কা বাঁধ। ফারাক্কা বাঁধ চালু করা হলে, বাংলাদেশের প্রবীণ রাজনীতিবিদ আব্দুল হামিদ খান ভাসানী লক্ষ্যাতিক জনতা নিয়ে ফারাক্কা  বাঁধের বিরুদ্ধে লং মার্চ বের করে। 
তবে, মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর নেতৃত্বে এই লং মার্চ কিছুদূর যাওয়ার পরে স্থগিত হয়ে যায়। কেননা বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে আব্দুল হামিদ খান ভাসানীকে বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয় বন্ধ করে দেয়ার জন্য। সরকারের বিশেষ অনুরোধ রক্ষায় তিনি লং মার্চ স্থগিত করেন। তবে ঐতিহাসিক এই ঘটনাকে স্মরণ করার জন্য প্রতিবছর, ফারাক্কা লং মার্চ দিবস পালন করা হয়। 

ফারাক্কা বাঁধের ইতিহাস সম্পর্কে আশা করি জানতে পারলেন। উপরে, ফারাক্কা বাঁধের গেট কয়টি এবং ফারাক্কা বাঁধের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরা হয়েছে। আশা করি গুরুত্বপূর্ণ তথ্যবহুল এই আর্টিকেলটি আপনার কাছে ভালো লেগেছে। 

উপসংহার

ফারাক্কা বাঁধ সম্পর্কে ইতিমধ্যেই উপরে বিস্তারিত আলোচনা তুলে ধরা হলো। ফারাক্কা বাঁধের গেট কয়টি, এবং ফারাক্কা বাঁধের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। তাই প্রথম থেকে যদি আপনি আর্টিকেলটি পড়ে থাকেন তাহলে নিশ্চয়ই ফারাক্কা বাঁধ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পেরেছেন। এই আর্টিকেলটি যদি আপনার কাছে ভালো লেগে থাকে তাহলে শেয়ার করবেন।১৬৪১৩

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

লাইফ ফ্রিল্যান্সারের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url