শিশুর ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার
এখন তো মশার হার অনেক বেশি বেড়ে গেছে। তাই সবসময় আমাদের এই মশার থেকে দূরে থাকতে হবে। আপনার শরীরে মশার কামড় অনেক বেশি হয়ে গেলে তার থেকে ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ অনেক বেশি থাকে। তাই আজকের এই পোষ্টে আমরা আলোচনা করব শিশুর ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে নিয়ে।
আপনারা সবাই চেষ্টা করবেন শিশুদের মশা থেকে বিরত রাখতে। কারণ ছোট বাচ্চাদের মশার কামড়ালে খুব সীমিত সময়ের মধ্যেই ডেঙ্গু রোগ হওয়ার লক্ষণ বেশি থাকে। তাই আজকের আরর্টিকেলে আমরা আলোচনা করব কি করলে শিশুদের ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ থেকে প্রতিকার করতে পারবেন। তাহলে চলুন আর দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক ডেঙ্গু রোগের লক্ষণও প্রতিকার সম্পর্কে।
আর্টিকেল সূচিপত্রঃ-
- ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ গুলো জেনে নিন
- বর্তমানে ডেঙ্গু লক্ষণ বিস্তারিত জানুন
- ডেঙ্গু জ্বর ভালো করার উপায়
- ডেঙ্গু জ্বর কতদিন থাকে
- বাচ্চাদের ভাইরাস জ্বরের লক্ষণ
- ডেঙ্গু রোগের চিকিৎসা সম্পর্কে জানুন
ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ গুলো জেনে নিনঃ
বাংলাদেশে অত্যান্ত থেকে একটি ভয়াবহ রোগ হচ্ছে ডেঙ্গু জ্বর। বাংলাদেশের সব জায়গা থেকে এই রোগটি ঢাকায় অনেক বেশি। ডেঙ্গু রোগ হলে ১০১ ডিগ্রি থেকে ১০২ ডিগ্রী শরীরে তাপমাত্রা দেখা দিবে। ডেঙ্গু জ্বর হলে একটানা জ্বর থাকবে এবং ঘাম দিয়ে ছেড়ে যাওয়ার পর আবারো জ্বর আসতে পারে। এর সাথে শরীর ব্যথা মাথাব্যথা চোখের নিচে এবং কালচে দাগ ইত্যাদি অনেক সমস্যা দেখা দিবে।
আরও পড়ুণঃডিসেম্বর মাসের সরকারি ছুটি
তবে এগুলো না থাকলেও ডেঙ্গু হতে পারে। এই সময় প্রচুর পরিমাণে তরল জাতীয় খাবার গ্রহণ করতে হবে। কোন বাজে খাবার খাওয়া যাবে না। যেমন ডাবের পানি লেবুর শরবত ফলের জুস এবং খাবার স্যালাইন খেতে হবে। এমনকি এ সময় প্রচুর পরিমাণে ঠান্ডা পানি বিশুদ্ধ পানি গ্রহণ করতে হবে। তিন থেকে ১৫ দিনের মধ্যে ভাইরাস বহনকারী ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ দেখা দিতে পারে।
তাই এ সময় আমরা কখনো দেরি না করে সরাসরি ডাক্তারের কাছে গিয়ে চিকিৎসা নিব। এবং ডাক্তার যে পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ লিখে দিবে ঠিক সেই অনুযায়ী আমরা ওষুধ খাব। আমাদের শরীরে কখনো যদি তাপমাত্রা বেড়ে যায় তাহলে আমরা দেরি না করে ডাক্তারের কাছে গিয়ে তা পরামর্শ করে চিকিৎসা নিব।
বর্তমানে ডেঙ্গু লক্ষণ বিস্তারিত জানুনঃ
বাংলাদেশের কিছু কিছু জেলাতে বর্তমানে ডেঙ্গু প্রকোপ বেড়ে গেছে। সাধারনত জুলাই হতে অক্টোবর ডেঙ্গুর মৌসুম হিসেবে ধরা হয়। তাই এজন্য আমাদের সবাইকে সচেতন হওয়া দরকার। ডেঙ্গু ভাইরাস বহনকারী এসিড ইজি টাই জাতীয় মশা কামড় দিলে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে যায়। এই মশা যদি কোন সুস্থ ব্যক্তিকে কামড়ায় তাহলে তার জন্য অনেক ক্ষতি করে এবং সে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রমণ হবে।
সাধারণত জীবনে বহনকারী মশাগুলো কামড়ালে চার থেকে ছয় দিনের মধ্যে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হতে পারে।গ্রামে বসবাসকারী লোকজনের চেয়ে শহরে অভিজাত এলাকায় যেখানে বড় বড় দালানকোঠা রয়েছে সেখানে দূর পাল বেশি লক্ষণ দেখা দেয়। এর প্রধান কারণ হলো শহরের বড় বড় দালান করার ভিতরে ছাদে ফুলের টবে ড্রেন এ বিশেষ করে স্বচ্ছ পানি জমে থাকে সেখান থেকে আসলে এই মশাগুলো জন্ম নেয়।
বড় বড় মশাগুলো তাদের বংশবিস্তারের জন্য এগুলো জায়গায় বসবাস করে এবং সেখানে ডিম ছাড়ে সে ডিম থেকে আরো অনেকগুলো ডেঙ্গু জন্ম নেয়। তাই আমরা কখনো বাড়ির আঙিনার আশেপাশে ময়লা আবর্জনা যেখানে সেখানে পানি জমা রাখবো না সবসময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখবো।
ডেঙ্গু জ্বর ভালো করার উপায়ঃ
সাধারণত ডেঙ্গু জ্বরের প্রভাব থাকে জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত। এই সময় এই রোগটি হয় এবং এটি একটি ভাইরাসজনিত রোগ। এই রোগটি খুবই মারাত্মক এবং এ রোগের জন্য অনেক করণীয় থাকে আর সেটা আমরা করি না। আমরা যদি নিয়মকানুন মেনটেন করে চলাফেরা করি তাহলে আমাদের কে কোন ভাইরাস আক্রমণ করতে পারবে না।
তা না করে আমরা যদি যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা ড্রেন পরিষ্কার না করি ফুলের টবে অযথাই পানি জমায় রাখি তাহলে ওইখান থেকে মশার আকৃতি ডেঙ্গু হয়ে আমাদেরকে আক্রমণ করবে। আমাদের যদি ডেঙ্গু রোগ হয় তাহলে আমাদের প্রচুর পরিমাণে বিশ্রাম করতে হবে। আমাদের ডেঙ্গু রোগ হলে আমরা বাইরে অযথাই ঘোরাফেরা করবো না সব সময় বাসায় রুমের ভিতরে থাকবো এবং ডক্টরের পরামর্শ দেওয়া ওষুধ খাব।
আমাদের ডেঙ্গু রোগ হলে প্রচুর পরিমাণে স্যালাইনের পানি ডাবের পানি লেবু ফলমূলের শরবত খেতে হবে। ডেঙ্গু জ্বর হলে প্যারাসিটামল ও খাওয়া যাবে স্বাভাবিক ওজনের একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি প্রতিদিন সর্বোচ্চ আটটি প্যারাসিটামল খেতে পারবে। আমাদের জ্বর হলে আমরা বাসায় বসে না থেকে খুব জরুরিভাবে ডাক্তারের কাছে যাবো এবং ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খাব।
ডেঙ্গু জ্বর কতদিন থাকেঃ
ডেঙ্গু একটি ভাইরাস বাহি রোগ। মশা কামড়ানোর চার থেকে সাত দিনে পর উপসর্গ দেখা দেয়। জ্বরের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হতে পারে। ১০১ থেকে ১০২ ডিগ্রি পর্যন্ত জ্বর উঠতে পারে। ডেঙ্গু জ্বরের উপসর্গ হয় সাধারণত সর্দি-কাশি মাথাব্যথা হাড়ের জোর ও পেশিতে তীব্র ব্যথা বমি বমি ভাব শরীরের ফুসকুড়ি দেখা দেয় এবং চোখের পিছনে ব্যথা হতে পারে।
আরও পড়ুণঃওয়াইফাই পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করার নিয়ম
জ্বরের ১০২° এর নিচে থাকলে 6 ঘন্টা পর পর প্যারাসিটামল খেতে হবে। আর ১০২ ডিগ্রীর উপরে থাকলে প্যারাসিটামল সাপোজিটরি ব্যবহার করতে হবে। যদি আপনার এই জ্বর হয় তাহলে প্যারাসিটামল বাদে অন্য কোন ব্যথার ওষুধ খেতে পারবেন না। আর যদি প্যারাসিটামল বাদে অন্য কোন ওষুধ খান তাহলে আপনার জন্য অনেক ক্ষতিকর।
কারণ যদি আপনি ও ব্যথার মেডিসিন খান তাহলে রক্তক্ষরণ হতে পারে এমনকি মৃত্যু হতে
পারে। আমাদের জ্বর হলে সাধারণত মুখে রুচি থাকে না। এ সময় আমাদের পুষ্টিকর এবং
প্রোটিন জাতীয় খাবার খেতে হবে। আমাদের যদি এরকম কোন ভাইরাস আক্রমণ করে তাহলে
সর্বপ্রথম আমাদের ডাক্তারের কাছে যেয়ে পরামর্শ করতে হবে এবং তার পরামর্শ
অনুযায়ী ওষুধ খেতে হবে। আমরা যদি ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ না খাই তাহলে
আমাদের জন্য খুবই ক্ষতিকর।
বাচ্চাদের ভাইরাস জ্বরের লক্ষণঃ
ঋতু বৈচিত্র্যের কারণে আমাদের দেশে বিশেষ করে জ্বরের লক্ষণ বেশি। আমাদের দেশে সাধারণত ঋতু পরিবর্তনের জন্য এক সময় একটি ভাইরাসজনিত রোগ প্রায় সবাইকে আক্রমণ করে। বিশেষ করে এই সময় শিশুদের এই রোগে আক্রমণ করে বেশি। বিশেষ করে যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম যেমন শিশুদের বয়স্ক লোকদের এই ভাইরাসটি আক্রমণ করে।
শিশুদের ভাইরাস জ্বর হলে সাধারণত সর্দি কাশি বমি গলা ব্যথা ও শরীর ব্যথা এমন কি পাতলা পায়খানাও হতে পারে। এ সময় অনেক ধরনের ভাইরাস একত্রিত হয়ে সবাইকে আক্রমণ করে থাকে। তাই আমাদের এই সময় খুব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হয়ে থাকতে হবে। বিশেষ করে শিশুদের এই রোগে আক্রমণ করে বেশি কারণ তারা ধুলাবালি নিয়ে খেলাধুলা করে রোদে বেশি ঘুরে ঠিকমতো খাবার খায় না।
অপরিষ্কার হয়ে থাকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হয়ে থাকে না তাই শিশুদের এই ভাইরাসটি
বেশি আক্রমণ করে। আমরা আমাদের পরিবারের যদি কোন শিশু থাকে তাহলে তাকে সব সময়
পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ভাবে রাখবো এবং পুষ্টিকর খাবার খাওয়াবো কোন আজেবাজে কিছু
খাওয়াবো না।
ডেঙ্গু রোগের চিকিৎসা সম্পর্কে জানুনঃ
ডেঙ্গু রোগ হল একটি মশা বাহিত ভাইরাস ঘটিত রোগ। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে প্রথমবার
ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর বিশেষ কোনো উপসর্গ বা লক্ষণ দেখা যায় না। শুধু অল্প
কিছু ক্ষেত্রেই রোগের প্রভাব গভীর হয়। ডেঙ্গু সাধারণ উপসর্গগুলি হলঃ-
১. উচ্চ জ্বর
২. তীব্র মাথার যন্ত্রণা
৩. চোখের পিছনে ব্যথার অনুভূতি
৪. মাংসপেশীতে যন্ত্রণা
৫. বমি বমি ভাব
৬. মাথা ঘোরা
৭. গ্রন্থি ফুলে যাওয়া
৮. ত্বকে বিভিন্ন স্থানে ফুসকুড়ি
এই উপসর্গ গুলি রোগ সংক্রমনের চার থেকে দশ দিনের মধ্যে দেখা দেয়। সাধারণত দুই থেকে সাত দিন পর্যন্ত উপসর্গ স্থায়ী হতে পারে। আরো বেশ কিছু কারণে ডেঙ্গুর জ্বরে তীব্রতা বাড়ে এবং যাকে এই রোগটি আক্রমণ করে তার শরীর একেবারে অন্যরকম হয়ে যায়। যেমন আরো বেশ কিছু গুরুতর উপসর্গগুলো হলঃ-
১. প্রচন্ড পেট ব্যথা
২. ক্রমাগত বমি হওয়া
৩.নাক থেকে রক্তপাত
৪. মলের সাথে রক্তপাত
৫. প্রস্রাবের সাথে রক্তপাত
৬. ও নিয়ন্ত্রিত পায়খানা
৭. দ্রুত শ্বাস প্রশ্বাস
৮. ক্লান্তি
৯. বিরক্তি
১০. অস্থিরতা
ডেঙ্গুর এই জীবাণুগুলো শরীরের রক্তর সাথে মিশে যায় এবং সেটি অনেক ক্ষতি করে। ডেঙ্গুর চিকিৎসা বিশেষ কোনো ওষুধ বা প্রতিষেধক এখন পর্যন্ত আকৃতি হয়নি। এমনকি এটা নিয়ে বসে আছে তাও না এই সমস্যাটা গবেষণা করা হচ্ছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ডেঙ্গু রোগের চিকিৎসা ঘরোয়া ভাবে করে সেরে যায়।এ রোগের প্রধান ওষুধ হচ্ছে প্যারাসিটামল আর এই ওষুধ দিয়ে যন্ত্রণা এবং জ্বরের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।
ডেঙ্গু জ্বরের সময় বেশি বেশি তরল জাতীয় খাবার খেতে হবে যেমন খাবার স্যালাইন অতিরিক্ত বেশি খেতে হবে ফলমূলের শরবত খেতে হবে। এবং পেঁপের তরকারি এইরকম ফলমূলের তরকারি খেতে হবে বেশি বেশি এবং ডাবের পানিও খেতে হবে। এগুলা নিয়মিত খেলে ডেঙ্গু জ্বরের নিয়ন্ত্রণ অনেকটাই আসবে এবং তাড়াতাড়ি সুস্থ করে দেবে।
লাইফ ফ্রিল্যান্সারের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url